যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা
বোরকা পরে এসে গুলি করে কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন হত্যার ঘটনায় আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এজাহারবহির্ভূত তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, হত্যাকারীদের পরনে থাকা বোরকা, হিজাব ও জুতা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান এসব তথ্য জানান। আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া জামাল হত্যা মামলাটি দাউদকান্দি থানা থেকে গত শনিবার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। এর আগে হত্যাকাণ্ডের সাত দিনের মাথায় গত শনিবার রাতে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মৃত কালু নিয়ে ছেলে মোহাম্মদ রবি, একই এলাকার মৃত আসাদ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহপরান এবং তিতাস উপজেলার লালপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সুমন হোসেন। তাঁদের মধ্যে শাহপরান মামলার ৮ নম্বর আসামি জিয়ারকান্দি গ্রামের অলি হাসানের ভায়রা। রবি এই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৯ নম্বর আসামি কালা মনিরের ভাই।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের আশ-পাশে থাকা সকল সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে বোরকা পরা তিনজনকে শনাক্তের জন্য ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। আসামিদের ঘটনাস্থলে প্রবেশ ও বাহিরের রাস্তা শনাক্ত করা হয়। বিশ্লেষণ করে ঘটনার রাতে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহার করা কালো রঙের মাইক্রোবাসটির চালক সুমন হোসেনকে গত ৬ মে রাতে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে সুমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চান্দিনা এলাকায় তাঁর ভাড়া বাসার খালি জায়গা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। পরে তার দেখানো মতে ঘটনার সময় বোরকা পরিহিত আসামিদের ব্যবহৃত দুইজোড়া ক্যানভাস সু (জুতা) এবং সুমনের একটি ট্রাউজার জব্দ করা হয়। অপর দুই আসামি শাহপরান ও রবিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে রবিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শাহাপরান ঘটনার সময় ঢাকায় অবস্থান করে ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদের সাথে ঘটনার আগে ও পরে যোগাযোগ করে এবং তাদের আত্মগোপনে থাকার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন। আরেক আসামি রবি ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করে শুটারদেরকে তথ্য দেয় এবং পালাতে সাহায্য করে। এই মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তার ও ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দাউদকান্দির গৌরীপুর পশ্চিম বাজার ঈদগাহ এলাকার মসজিদ গলিতে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে (৪০) গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং ওই বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের দুইদিন পর ২ মে রাত সাড়ে ১১টায় জামালের স্ত্রী পপি আক্তার বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply