1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. mdrubelmollah1989@gmail.com : Md.Rubel Mollah : Md.Rubel Mollah
December 9, 2023, 6:20 am

বরিশালে ১৩টি পয়েন্টে ইজিবাইক থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা চাঁদাবাজি

  • আপডেটের সময় : Saturday, May 20, 2023
  • 59 ০ বার দেখছেন

 

বরিশাল নগরীর ১৩টি পয়েন্ট থেকে চাঁদা দিয়ে চলছে টোকেন বিহিন অবৈধ ইজিবাইক। এসব ইজিবাইক চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিমাসে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

ট্রাফিক পুলিশ, স্থানীয় ক্ষমতাসীন দল ও অটো রিকশা শ্রমিক কল্যাণ সংগঠনের নামে এ টাকা উত্তোলণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ১৫-২০ জন শ্রমিক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে প্রকাশ্যে এসব চাঁদাবাজি করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা কর্মী প্রশাসনের সহায়তায় এই চাঁদাবাজি করছে।

ইজিবাইক মালিক ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, নগরীর বেলতলা খেয়াঘাট থেকে লঞ্চ রুটে টোকেন বিহিন অন্তত ১৫০ অবৈধ ইজিবাইক চলছে। যা নিয়ন্ত্রণ করছে জেলা-মহানগর অটো রিকশা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ ও সাধারণ সম্পাদক জামাল গাজি।

এসব ইজিবাইক থেকে প্রতিমাসে ২০ হাজার চাঁদা আদায় করা হয়। নগরের সিএন্ডবি ১ নম্বর পোল থেকে ঠাকুর বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫০টি ইজিবাইক থেকে প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা তোলেন সোহেল বিশ্বাস।

জিয়া সড়ক নথুল্লাবাদ পোল থেকে লোহার পোল পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ইজিবাইক চলাচল করে। এই স্থান থেকে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা উঠায় কথিত শ্রমিকলীগ নেতা যাত্রা কবির। হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা থেকে টিয়াখালী পর্যন্ত ৮০টি ইজিবাইক থেকে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেন শ্রমিকলীগ নেতা রয়েল ওরফে টাক রয়েল ও আফজাল মজুমদার।

এদিকে সায়েস্তাবাদ থেকে তালতলী পর্যন্ত প্রায় ৫০টি ইজিবাইক থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা চাঁদা উঠায় শহিদুল ইসলাম। কাশিপুর বাজার থেকে বারৈজ্যার হাট-রায়াপুর পর্যন্ত ৭০টি ইজিবাইক থেকে ৫০হাজার টাকা চাঁদা উঠায় বাজার কমিটির সভাপতি কবির , মুন্না ও রিপন। মড়কখোলার পোল থেকে লাকুটিয়া সড়কে প্রায় ১৫০টি ইজিবাইক থেকে প্রায় ২ লাখ ১০হাজার টাকা চাঁদা তোলে স্থানীয় তারেক ও ইজবাইক শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়নের সদস্য হায়দার ও আফজাল।

এ বিষয়ে ইজবাইক শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়নের সদস্য হায়দারের মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পরে ফোন দিয়েন বলে কেটে দেন।

কালিজিরা বাজার থেকে ৩০টি ইজিবাইক থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা উঠায় লিটন নামে এক ব্যক্তি। রুপাতলী এলাকায় প্রায় ৩০টি ইজিবাইক থেকে জামাল গাজী প্রতিমাসে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা উঠায়। দপদপিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর সামনে থেকে দিনারের পোল ও চৌমাথা পর্যন্ত ৭০টি ইজিবাইক থেকে প্রতিমাসে এক শ্রমিকলীগ নেতার নামে প্রতিমাসে ৬০ হাজার টাকা চাঁদ উঠায়া কথিত আ’লীগ নেতা নেতা মঈদুল মুন্সি ও শংকর। সোনামিয়ার পোল থেকে প্রায় ৪৫টি ইজিবাইক থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা চাঁদা তোলে হাবুল।

অন্যদিকে সাগরদী বাজার থেকে কারিকর ব্রিড়ি ব্রাঞ্চ হয়ে টিয়াখালী পুল পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি ইজিবাইক চলাচল করে। এই লাইন থেকেও প্রায় ২০ হাজার টাকা চাঁদা উঠায় সুমন। জেল খানার মোড় থেকে নথুল্লাবাদ রুট থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে দুলাল নামে এক ব্যক্তি।

বাশের হাট -কাগাশুরা থেকে আমির গঞ্জ রুটে ৭৫টি ইজিবাইক চলাচল করে। এই রুট নিয়ন্ত্রণ করে আসলাম, ফারুক, সুমন সহ ৬-৭ জন। সেখান থেকে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয়। চাঁদা উঠানোর বিষয় স্বীকার করে বাশের হাটের আসলাম বলেন, এখন আমি ইজিবাইক থেকে চাঁদা তোলার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে। তবে শুনেছি লাইলম্যান ফারুক, সুমন এখন টাকা তুলছে। কয়েকজন সংবাদকর্মীও এখান থেকে টাকা পায়।

একাধিক ইজিবাইক চালক জানান, প্রতিমাসে প্রতিটি লাইনে টাকা দিয়ে গাড়ি রাস্তায় চালাতে হয়। টাকা দিলে গাড়ি চলে, না দিলে তাদের নির্যাতন ও মারধরের শিকার হতে হয়।
কয়েকজন শ্রমিক নেতা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন, যারা রুট নিয়ন্ত্রণ করছেন, তারাই মাসের শুরুতে বিশেষ বিট দিয়ে ট্রাফিক বিভাগ ও সাংবাদিকদের নামে মাসোহারা আদায় করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় রোডের শংকর বাবু, সোনামিয়ার পোল হাবুল ও সাগরদি রোডের সুমন সাংবাদিকদের জানান, টাকা তারা একা নেন না। পুলিশ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করেই বিট চালাতে হয়।

নগরভবন সূত্রে জানা গেছে, ‘তৎকালিন মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সময়ে নগরীতে চলাচলের অনুমোদন পায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক বা অটো রিকশা। তখন প্রথম দফায় দেড় হাজার ইজিবাইকের অনুমোদন দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বিএনপির মেয়র আহসান হাবিব কামালের সময়ে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬১০টিতে।

পরবর্তিতে ইজিবাইক বন্ধের নির্দেশ দেয় জালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরপরই ২০১৯ সাল থেকে অনুমোদন দেয়া ইজিবাইকের নবায়ন বন্ধ করে দেয় সিটি করপোরেশন। তবে নবায়ন বন্ধ থাকলেও ট্রাফিক পুলিশ এবং শ্রমিক সংগঠনকে চাঁদা দিয়ে বহাল তবিয়তেই চলছিলো ইজিবাইক। সেই সাথে হু হু করে বাড়তে থাকে এই যানবাহনের সংখ্যা। বর্তমানে এই যানবাহনের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

চাঁদাবাজির বিষয়ে বরিশাল জেলা ও মহানগর ইজিবাইক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, সংগঠনের ব্যানারে চাঁদাবাজি করা হয় না। আমাদের নিজেদের টাকা দিয়ে ইজিবাইক চালকদের সকল সুযোগ সুবিধা দেখা হচ্ছে। তার দাবি, যারা চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা সংগঠনের কেউ না।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, প্রতিদিনই অবৈধ ইজিবাইকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে। অলি গলিতে যেসব ইজিবাইক চলাচলে ট্রাফিক পুলিশের নামে কেউ চাঁদা উত্তোলণের বিষয়টি জানা নেই। এ ক্ষেত্রে কোন ট্রাফিক পুলিশ জড়িত থাকলে তদন্ত শেষে প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
IT Cornerbd.com Call:01711073884
Theme Customized By BreakingNews